বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রাচীন ও মধ্যযুগ।।

in আমার বাংলা ব্লগyesterday

নমস্কার বন্ধুরা,


আশা করি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।আজ আমি আপনাদের সাথে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রাচীন ও মধ্যযুগ নিয়ে কিছু আলোচনা তুলে ধরলাম। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে।

WhatsApp Image 2024-09-21 at 14.14.18.jpeg

Image taken from Open AI


বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস প্রধানত তিনটি যুগে বিভক্ত: প্রাচীন যুগ, মধ্যযুগ এবং আধুনিক যুগ। এখানে প্রাচীন ও মধ্যযুগ নিয়ে আলোচনা করা হলো:

প্রাচীন যুগ (৮০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত)

বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগকে তাম্রযুগ বা তন্ত্র যুগ বলা হয়। এ সময়ের সাহিত্য মূলত ধ্বনিবিজ্ঞান, সংস্কৃত ভাষার প্রভাব এবং প্রাচীন লিপি ও ভাষার উপর নির্ভরশীল ছিল। এই যুগের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:

  1. চর্যাপদ (৮০০-১২০০ খ্রিস্টাব্দ): বাংলা সাহিত্যের প্রথম লিখিত দলিল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এটি বৌদ্ধ সাধকদের রচিত গানের সংকলন। চর্যাপদে বৌদ্ধ ধর্মের তন্ত্র এবং সহজিয়া মতবাদের প্রভাব স্পষ্ট। এটি প্রাচীন বাংলা ভাষার নমুনা হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

  2. ভাষা ও রীতি: চর্যাপদে যে ভাষা ব্যবহৃত হয়েছে তা আজকের বাংলা থেকে অনেকটাই আলাদা। এটি প্রাচীন বাংলা ভাষার রূপ যা অনেকটাই সংস্কৃত ও পালি ভাষার সাথে মিশ্রিত। ছন্দ, অলঙ্কার ও বর্ণনামূলক কাব্যরীতির প্রয়োগ লক্ষণীয়।

মধ্যযুগ (১২০০-১৮০০ খ্রিস্টাব্দ)

বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগ মূলত ধর্মীয় ও প্রণয়ময় কাব্য এবং মঙ্গলকাব্যের যুগ হিসেবে পরিচিত। এই সময়ে বাংলা সাহিত্যে ধর্মীয় ও আঞ্চলিক রীতি এবং কাব্যচর্চার বিকাশ ঘটে।

  1. বৈষ্ণব পদাবলী: শ্রীচৈতন্যদেবের প্রভাবে বৈষ্ণব কবিরা কৃষ্ণলীলা ও রাধাকৃষ্ণের প্রেমকাহিনী নিয়ে পদ রচনা করেন। বড়ু চণ্ডীদাস, বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস প্রমুখ কবিরা এই ধারার মূল প্রবক্তা। প্রেম, ভক্তি এবং আলঙ্কারিক রীতির প্রয়োগ এই কবিতাগুলোর বৈশিষ্ট্য।

  2. মঙ্গলকাব্য: এই ধারায় মঙ্গলদেবতা এবং দেবীদের প্রশস্তি রচনা করা হতো। মঙ্গলকাব্য তিনটি প্রধান শাখায় বিভক্ত:

    • চণ্ডীমঙ্গল: মুকুন্দরাম ও মানিক দত্ত এই শাখার প্রধান কবি।
    • ধর্মমঙ্গল: রামচন্দ্র কবি, রঘুনন্দন প্রমুখ কবিরা এই ধারায় উল্লেখযোগ্য।
    • মনসামঙ্গল: বিপ্রদাস, চন্দ্রাবতী প্রমুখ কবিরা এই ধারায় খ্যাতিমান।
  3. ইসলামী সাহিত্য: মধ্যযুগে মুসলিম কবিদের প্রভাবও উল্লেখযোগ্য। কবি শাহ মুহম্মদ সগীর, কবি আলাওল, কবি দৌলত কাজী প্রমুখ ইসলাম ধর্মের প্রভাবিত সাহিত্য রচনা করেছেন। তাদের কবিতায় মর্সিয়া, পুথি, দোয়া, ফতেহনামা প্রভৃতি রচনার আভাস পাওয়া যায়।

  4. অনুবাদ সাহিত্য: মধ্যযুগে সংস্কৃত, আরবি ও ফারসি ভাষার বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ, উপাখ্যান ও মহাকাব্য বাংলায় অনুবাদ করা হয়। "শ্রীমদ্ভাগবত", "মহাভারত" ইত্যাদি সংস্কৃত মহাকাব্যের অনুবাদ এই সময়ে হয়েছে।

  5. গীতিকাব্য: মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে গীতিকাব্যেরও স্থান রয়েছে। বিভিন্ন রাগ-রাগিণী এবং প্রেমের কাব্য রচিত হয়েছিল। যেমন: যোগীন্দ্রনাথ সরকার, রাজেন্দ্রলাল মিত্র প্রমুখ।

মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যে আঞ্চলিক ভাষা ও লোকসাহিত্যের প্রভাব বৃদ্ধি পায়, যা আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ভিত্তি রচনা করে।
VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


ধন্যবাদ।সবাই ভালো থাকবেন।

BoC- linet.png
-cover copy.png

|| Community Page | Discord Group ||


Posted using SteemPro Mobile

1000158488.jpg

PUSS COIN:BUY/SELL

Sort:  
 10 hours ago 

বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনযুগ মূলত পুরোটাই চর্যাপদ নিয়ে। চর্যাপদ ব‍্যতীত সেরকম উল্লেখযোগ্য কোন সাহিত‍্যকর্ম নেই। এবং পরবর্তীতে মধ‍্যযুগে বৈষ্ণব পদাবলি। চমৎকার লিখেছেন দিদি। খুবই সুন্দর লাগল। দুইটা পার্ট চমৎকার ভাবে উপস্থাপন করেছেন। আধুনিক যুগ নিয়েও পরবর্তীতে লিখিয়েন।

 3 hours ago 

তারমানে আমরা নিঃসন্দেহে বলতে পারি, মধ্যযুগ থেকেই বাংলা সাহিত্যের চর্চা বেশ প্রকট ভাবে বিস্তার হয়েছে। ভালো লাগলো দিদি ভাই লেখাটি।