কাজ থেকে একটু বিরতি নিতে ডাক্তার কাছে আসা এক রুগীর গল্প

in আমার বাংলা ব্লগyesterday

হ্যালো! আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভাল আছেন। আমার পোস্টে আপনাকে স্বাগতম। হাজির হলাম চেম্বার কথনের আরেকটা গল্প নিয়ে। আজকে আমরা শুনবো বিপদগ্রস্থ এক ওয়ার্কারের কথা!

steem.jpg

আজকের রুগী একজন টাইলস মিস্ত্রি। সিমেন্ট বা অন্য কোন কেমিক্যালের সংস্পর্শে উনার ডান হাতে এলার্জির সমস্যা শুরু হয়েছে বিগত ২-৩ মাস থেকে। বাম হাতেও আছে কিন্তু কম। হিস্ট্রি নিয়ে এবং পরীক্ষানিরীক্ষা করে অন্য কোন সমস্যা পাওয়া গেল না। সর্বশেষ ডায়াগনোসিস দাড়াল সিমেন্ট বা কেমিক্যাল এলার্জি! একনম্বর চিকিৎসা হচ্ছে কাজ পরিবর্তন করে এমন কাজ করা যেখানে সিমেন্টের সংস্পর্শে যাওয়া লাগবে না।

মজার বিষয় হচ্ছে উনিও জানেন এটা। স্মার্ট রুগী। বেশ শিক্ষিতও মনে হলো। কথায় কথায় জানালেন উনার বিদেশ জীবনের কিছু কথা। উনার স্পন্সর উনাকে একটা কোম্পানিতে কাজ করতে দিয়েছিলেন। ভাল ছিলেন সেখানে। উনার পারফরমেন্স দেখে সেই কোম্পানি উনাকে নিয়ে নেয়ার অফার দেন। এর মধ্যেই ছুটিতে দেশে যান। দেশ থেকে ফেরার পর উনার স্পন্সর আর উনাকে সেই কোম্পানিতে যেতে দেন নাই, হাত ছাড়া হয়ে যাবে এই ভয়ে!

পরবর্তীতে বর্তমানে যেখানে কাজ করছেন সেটা শুরু করেন। ভাল লাগে নাই। বেতন কম। পরিশ্রম বেশী। একটুও রেস্ট পান না। ঘুমানোর সময়ও অনেক কম। ভোর থেকে রাত ১০ অবধি কাজ উনার। দুপুরে যতটুকু সময় পান, রান্না খাওয়াতেই সেটা চলে যায়। এক পর্যায়ে উনি বললেন যে, উনি নিজেই জানেন তার এলার্জির চিকিৎসা! আমার কাছে আসার মূল উদ্দেশ্য হলো কাজ থেকে কয়েক ঘন্টার জন্যে বিরতি পাওয়া। আসার পথে নাকি এক ঘন্টা শান্তির একটা ঘুম দিয়েছেন গাড়িতে।

কঠোর পরিশ্রম করলেও টাইম মত বেতন পান না। বিগত দুই মাসের বেতন নাকি পান নাই। উনার কিছু এক্সট্রা কোয়ালিফিকেশান আছে। কিছু সাইড বিজনেস করেন উনি। উনার প্লান হচ্ছে বেতন পাইলেই এই স্পন্সর থেকে পালিয়ে যাবেন এবং সাইড বিজনেস করবেন। ধরা পড়ার রিস্ক আছে অবশ্যই। কিন্তু সেটাও মেনে নিতে তিনি রাজি আছেন। বোঝায় যাচ্ছে বর্তমান স্পন্সর এর কাছে উনি একেবারেই ভাল নেয়!

কথা চলতে চলতেই প্রেশক্রিপশান রেডি হয়ে গেল। সেটা নিয়ে উনি বিদায় নিলেন!

আজকে এ পর্যন্তই। কেমন লাগলো আজকে লেখাটি তা অবশ্যই জানাবেন কমেন্টের মাধ্যমে। ভাল থাকুন সবাই।

ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা নিরন্তর
ডা হাফিজ
ওমান
২০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Sort:  
 yesterday 

এরকম অনেক স্পন্সর আছে বেতন কম দিবে আবার ওদেরকে অন্য কোথাও যেতেও দিবে না। লোকটির চালাক মনে হলো তার একবার পালিয়ে দেখা উচিত যদি ধরা না পড়ে তাহলে তো বেঁচে গেল। তাছাড়া এই স্পন্সর থেকে বাঁচার কি কোন উপায় নেই?