পুজোর ব্যাকগ্রাউন্ড ডেকরেশন|| ক্র্যাফট
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। সকাল থেকে কাজের চাপে এত ব্যস্ত থাকায় আজকে পোস্ট করতে অনেকটা দেরি হয়ে গেল। তবে আজকের বৃষ্টির দিন আপনাদের কেমন লাগছে। আপনারা তো জানেনই ,আমি আমার পোষ্টের মধ্যেও অনেকবার শেয়ার করেছি যে, আমার বৃষ্টি কতটা পছন্দের। তাই গতকাল থেকে আমার মন একটু বেশিই ভালো আছে। বৃষ্টির দিন কাজ করে এত শান্তি পাই। তাই জন্যই বৃষ্টি ভালো লাগে।
আমি আমার বাড়িতে গণেশ চতুর্থী পালন করেছিলাম,সাথে বাড়িতেই পূজো করেছিলাম। সে সংক্রান্ত ব্যাপারে একটা পোস্ট আমি শেয়ার করেছি এবং আপনাদের জানিয়েছিলাম গণেশ চতুর্থীর সমস্ত রকম কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করব ,তাই আজকে চলে এসেছি অন্য আর একটা পোস্ট নিয়ে। যেখানে আমি দেখাতে চলেছি গণেশ চতুর্থীর দিন আমি কিভাবে আমার গণেশ ঠাকুরের ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি করেছিলাম।
গণেশ ঠাকুরকে আমি নিজের মতন করে নানান ভাবে সাজাতাম ,আমার গণেশ ঠাকুরটা ছোট ছিল ।তাই বেশি খাটাখাটনিও করতে হতো না। কিন্তু এবারে যেহেতু নতুন মূর্তি স্থাপনা করা হলো। তাই জন্য আয়োজনটাও ধুমধাম করা হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই সেই অনুযায়ী ঠাকুরের পেছনের দিকের ব্যাকগ্রাউন্ড কেমন হবে, সেটাও খুব ভাবার বিষয় ছিল। কিন্তু আমি মনে মনে একটা সুন্দর অবয়ব চিন্তা ভাবনা করেছিলাম। আর সেই মতোই কাজ শুরু করে দিয়েছিলাম সন্ধ্যে থেকে। পুজোর দিন এই সমস্ত কাজ করা অস্বাভাবিক। তাই পুজোর আগের দিন সারা দুপুর ধরে বাজার করার পর ,তারপর জিনিসপত্র কিনে নিয়েছিলাম ব্যাকগ্রাউন্ড সাজানোর।
আর বিকেল বেলা থেকে বসে পড়েছিলাম কাজে। আমার সাথে সহযোগিতা করেছিল আমার পাশের বাড়ির মৌসুমী বৌদি। আর তারপরে রাত আটটা নাগাদ বাবা যখন কাজ থেকে ফিরল, তখন বাবাও অনেক সহযোগিতা করেছে।
আমি যেহেতু দেওয়ালের সাথেই কিছু একটা করতে চাইছিলাম, তাই ঠিক করে নিয়েছিলাম আমার থার্মোকল দিয়েই কাজ করতে হবে। জিনিস বলতে আমি ডবল সাইড টেপ, থার্মোকল, আলপিন, একটা হলুদ সিল্কের কাপড়, অনেকগুলো প্লাস্টিকের ফুল, আর এরিকা গাছের পাতা ব্যবহার করেছি। এর সাথেই ফেভিকল আঠা এবং খবরের কাগজ লেগেছে।
প্রথম ধাপ
প্রথমেই দুটো থার্মোকল এক করে দেওয়ালের সাথে ধরে নিয়ে গণেশ ঠাকুরটা কোন জায়গাটায় বসতে পারবে ,সেটা আন্দাজ করে থার্মোকলের ওপরে একটা পেন্সিল দিয়ে ইউ আকৃতির একটা শেপ আমি এঁকে নিয়েছি।
দ্বিতীয় ধাপ
সেই মতই আমি কেটে নিয়েছি। সমান সমান করে কাটার জন্য আমি অবশ্যই থার্মোকল কাটার চাকু ব্যবহার করেছি। তারপর একদম দুটো থার্মোকলের থেকে এক একটা পার্ট কেটে নিয়েছি ইউ আকৃতি দেওয়ার জন্য।
তৃতীয় ধাপ
আঠা দিয়ে জোড়া লাগানোর পর। দুটো থার্মোকলকে এক জায়গায় লাগিয়ে,থার্মোকলের ওপরে আমি নানান কারুকার্য করার জন্য আরো কিছু আকারে থার্মোকল কাটতে লেগে গেছি বাবার সাথে। এই সময় অনেক সাহায্য করেছে।
চতুর্থ ধাপ
পরস্পর দুটো থার্মোকল জোরা দেওয়ার সময় আমি ব্যবহার করেছি খবরের কাগজ আর আঠা। খবরের কাগজ ছাড়া দুটো থার্মোকলের একসাথে জোড়া লাগা একটু ডিফিকাল্ট।
পঞ্চম ধাপ
অবশেষে ঠিক এরকম আকৃতি দাঁড়িয়েছে। তারপরে দেখুন আমি বাকি পার্টগুলো আস্তে আস্তে লাগিয়ে নিচ্ছি।
ষষ্ঠ ধাপ
আর আমাদের থার্মোকলের বেসটা তৈরি হয়ে গেছে, যেটাই আমরা কারুকার্য করব। এটাকেই আমরা দেওয়ালের সাথে আটকাবো।
সপ্তম ধাপ
আটকানোর আগেই আমি থার্মোকলের সাথে আলপিন দিয়ে আঠা দিয়ে খুব ভালোভাবে সেট করে নিচ্ছি এই হলুদ কাপড়টা।
অষ্টম ধাপ
তারপর দেওয়ালের সাথে আটকে দিয়েছি ডবল সাইড টেপ এর মাধ্যমে।
নবম ধাপ
ইচ্ছামত প্লাস্টিকের ফুল কিনে এনেছিলাম। এবার সুন্দর করে জ্যামিতিক আকার মতো সাজিয়ে তুলছি পুরো প্যান্ডেলটা। আপনারা খুব ভালো করে দেখলে বুঝতে পারবেন ফুলগুলো কিন্তু একদম অগোছালোভাবে সাজানো নয়। রঙের মাপকাঠি ধরে রেখেই আমি সুন্দর করে সাজিয়েছি। কারণ আমাকে থার্মোকলের যে আমি কাজ করেছি ,সেটাও ফুটিয়ে তুলতে হবে। আমি যদি লালের পরে ক্রমশ নানান রকম ফুল ব্যবহার করি, সেই আর্ট আর আসবে না।
দশম ধাপ
যাইহোক এবার আমি এরিকা গাছের ছোট ছোট পাতাগুলোকে দেখুন কিভাবে বসিয়ে দিচ্ছি থার্মোকলের ভেতর দিয়ে। এরিকা গাছের পাতাগুলোকে কেটে দেয়ার জন্য বাবা খুব হেল্প করেছে।
আর এভাবেই তৈরি হয়ে গেছে, দুর্দান্ত একটা দেওয়াল প্যান্ডেল। দেওয়াল প্যান্ডেল কথাটা একেবারেই নতুনত্ব তাই না? তবে আমি এটার কি নাম দেবো শব্দ খুঁজে পাচ্ছিলাম না।
আশা করছি আমার এই কারুকার্য টা আপনাদের সকলের ভালো লেগেছে। কোনো পুজো কিংবা কোন অনুষ্ঠানে আপনারা এই ভাবেই সাজিয়ে তুলতে পারেন। এই পোস্টটি বেশ প্রয়োজনীয় পোস্ট বলেই আমার মনে হয়। আজকের মত এখানেই শেষ করছি, সকলে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
পূজা উপলক্ষে আশা করি প্রচুর ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে সময় পার করছেন। বৃষ্টির কারণে হয়তো ধর্মীয় কাজে ব্যাঘাত করলেও এটা থেমে নেই।
আপনাদের ধর্ম অনুযায়ী আশা করি পৃথিবীর সকল মানুষের মধ্যে শান্তি বিরাজ করে এই প্রার্থনা করবেন